৬০ মাসের বেতন বাকি পরায় হতাশায় ভোগে অবশেষে আত্মহত্যা করেছেন টি কুমার নামে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর এক জ্যেষ্ঠ ফটো সাংবাদিক। গত সোমবার নিউজরুমে তার লাশ পাওয়া যায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৬ বছর বয়সী এই সাংবাদিক ভারতীয় বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়ায় (ইউএনআই) ফটো জার্নালিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একই সঙ্গে টি কুমার ইউএনআই’র তামিলনাড়ু ব্যুরো প্রধান হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন। তিনি ইউএনআইতে ১৯৮৬ সালে যোগ দেন। গত সোমবার নিউজরুমে অচেতন অবস্থায় টি কুমারকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনআই’র কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, গত ৬০ মাস ধরে প্রতিষ্ঠান তাদেরকে কোনো বেতন পরিশোধ করেনি। এক বিবৃতিতে কর্মীরা আরো জানিয়েছেন, নিয়মিত বেতন না পাওয়ার কারণে তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে ছিলেন টি কুমার।
কর্মীরা জানায়, কুমারের মেয়ের বাগদান পরের সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল এবং তিনি এর জন্য ৫ লাখ টাকার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তাকে মাত্র ২৫ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছিল।
এই ঘটনায় তদন্ত দাবি করেছে ইউএনআই’র কর্মীরা। পাশাপাশি টি কুমাররের সব বেতন ভাতা ও অতিরিক্ত ১০ লাখ রুপি দিতে ইউএনআইকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছেন কর্মীরা।
ইউএনআই’র এডিটর-ইন-চিফ অজয় কুমার কাউল বেতন না পেয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানের এক সাংবাদিকের আত্মহত্যার ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক’ বলে উল্লেখ করেছেন। একইসাথে ‘পুলিশের এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা উচিত’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টকে তিনি বলেন, ‘আমরা যতটা জেনেছি, আত্মহত্যার আগে টি কুমার কোনো সুইসাইড নোট রেখে যাননি। আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে কারণ হিসেবে সেখানে তিনি আর্থিক চাপ বা বেতন বকেয়ার মতো কিছু উল্লেখ করে যেতেন।’
তার দাবি, সাংবাদিকের আত্মহত্যার ঘটনার পেছনে কারণ হিসেবে বেতন বাকি থাকার কথা বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেন, ‘কিছু মানুষ ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে। এটি কি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু? আমরা চাই পুলিশ এটি ভালোভাবে তদন্ত করুক।’
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন সাংবাদিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। টি কুমারের স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যা রয়েছে।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ইন্ডিপেন্ডেন্ট