প্রতিদিন ১৭ বিমান অস্ত্র পাঠাচ্ছে পশ্চিমারা

ইউক্রেন সীমান্তে একটি গোপন বিমান ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়েছে। পশ্চিমাদের পাঠানো অস্ত্র ও গোলাবারুদ ওই বিমান ঘাঁটি ব্যবহার করেই ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিদিন অস্ত্র বোঝাই অন্তত ১৭টি বিমান ওই ঘাঁটিতে এসে নামছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো দেশগুলো থেকে এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইল ও দুই হাজার স্টিংগার বিমান বিধ্বংসী মিসাইল এসে পৌঁছেছে।

রাশিয়ার হামলা শুরুর আগে থেকেই ইউক্রেনে অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম পাঠাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। হামলা শুরুর পর যোগ দিয়েছে সামরিক জোট ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক সদস্য দেশ। নেদারল্যান্ডস আকাশ প্রতিরক্ষার জন্য রকেট লঞ্চার পাঠাচ্ছে। এস্তোনিয়া ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র, পোল্যান্ড ও লাটভিয়া ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে। এ ছাড়া চেক প্রজাতন্ত্র মেশিনগান, স্নাইপার রাইফেল, পিস্তল ও গোলাবারুদ পাঠাচ্ছে। এসব অস্ত্র এখন দ্রুততম ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ইউক্রেনে যাতে দ্রুত অস্ত্র পৌঁছানো যায় সেজন্য পূর্ব-ইউরোপে ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী একটি দেশে একটি গোপন বিমান ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। তবে ঠিক কোন দেশে তা প্রকাশ করা হয়নি। অস্ত্র চালান নিরাপদ রাখতে এর অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে। সিএনএন জানিয়েছে, গত সপ্তাহেই মার্কিন সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্কি মিলি বিমান ঘাঁটিটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। ওই সময় অস্ত্র চালান নিয়ে বিমান ঘাঁটির কর্মকর্তা ও কর্মরত সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। ইউক্রেনের সহায়তায় পশ্চিমের প্রায় দুই ডজনের মতো দেশ অস্ত্র পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪টি দেশ অস্ত্র চালান আকারে পাঠিয়েছে। পোল্যান্ডের সঙ্গে ইউক্রেন সীমান্ত খোলা রয়েছে। এই সীমান্ত দিয়ে বিগত কয়েক দিনে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। ইইউর ২৭টি দেশের মধ্যে ২১টি দেশ ন্যাটোর সদস্য। এই দেশগুলো সামরিক সরঞ্জাম পোল্যান্ড হয়ে ইউক্রেন পাঠাচ্ছে। তবে দেশগুলো নিজ নিজ দায়িত্বে সেখানে অস্ত্র পাঠাচ্ছে। এসব সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর ক্ষেত্রে ন্যাটো কিংবা ইইউর নাম ব্যবহার করা হচ্ছে না।

এদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠাতে পোল্যান্ডের ওপর চাপ অব্যাহত রয়েছে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেছেন, পোল্যান্ড যদি ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে পোল্যান্ডকে সমর্থন করবে যুক্তরাজ্য। তবে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, এ সিদ্ধান্ত পোল্যান্ডের জন্য সরাসরি পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইউক্রেনে বিমান পাঠানো হবে কিনা তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার পোল্যান্ডেরই। বিশ্লেষকরা বলছেন, পোল্যান্ড এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে তা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। এর ফলে পোল্যান্ডেও আক্রমণ চালাতে পারেন পুতিন। পোল্যান্ডে সোভিয়েত আমলের বিপুলসংখ্যক বিমান মজুদ রয়েছে। ইউক্রেনের পাইলটরা এসব যুদ্ধবিমান ওড়াতে পারদর্শী। এসব বিমান চেয়ে বারবার তাগিদ দিচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ