পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন ওই সময়ের সেনাপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মঈন ইউ আহমেদ। ওই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) আলোচিত ‘ওয়ান-ইলেভেন’র প্রধানতম চরিত্র মঈন ইউ আহমেদ তার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এ ভাষ্য তুলে ধরেন। ওই ঘটনায় এবারই প্রথম কথা বললেন বিদেশে অবস্থানরত মঈন।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা এবং ১৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের মহাপরিচালককে ফোনে পাওয়া গেলো। আমি ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে? তিনি এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ আমাকে বলেন।’
‘ক্যাপ্টেন শফিক ৩৫০ জন র্যাব সদস্য নিয়ে পিলখানা এলাকায় পৌঁছে গেলেন। তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে অনুমতি চান, পিলখানায় প্রবেশ করার জন্য। যেটা তিনি পাননি,’ যোগ করেন তিনি।
মঈন ইউ আহমেদ বলেন, তাকে যদি পারমিশন দেয়া হতো ভেতরে প্রবেশ করার জন্য, বিদ্রোহীরা তখনো সংগঠিত হয়নি এবং ক্ষয়ক্ষতিও করতে পারেনি।
ক্যাপ্টেন শফিক নিজেই তাদেরকে মোকাবেলা করতে পারতেন এবং কিছুক্ষণ পরেই ‘আমরা’ এসে তার সাথে মিলিত হয়ে বিদ্রোহীদের দমন করতে পারতাম বলেও মনে করেন ওই সময়ের সেনাপ্রধান।
মঈন ইউ আহমেদ সে সময়ে কিছু নতুন তথ্য সামনে এনেছেন। তিনি বলেন, ব্রিগেড কমান্ডারের নেতৃত্বে ১০ জন অফিসারের নেতৃত্বে ৬৫৫ জন অফিসার সেদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করেন। যার নাম দেয়া হয়েছিল ‘অপারেশন রেস্টোর অর্ডার।
‘আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বলি, অপারেশন রেস্টোর অর্ডার পরিচালনার শুরুতেই আমাদের একজন সৈনিককে নিহত হতে হয়েছে এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এইমাত্র খবর পেলাম বিদ্রোহীরা অনেক অফিসারকে হত্যা করেছে,’ যোগ করেন তিনি।
মঈন ইউ আহমেদ বলেন, ‘আমি আরো বলি, বিদ্রোহীদের কোনো শর্ত মানা যাবে না। আর আপনি তাদেরকে বলবেন, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে।’
‘আশা করবো একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য বের করে যারা এখনো দোষী চিহ্নিত হয়নি, কিন্তু এর সাথে জড়িত ছিল, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে সঠিক বিচার করা হোক,’ বলেন সাবেক এ সেনাপ্রধান।