নোয়াখালীতে নার্স হত্যা : তরুণীর প্রতি ঘাতকের ছিল দীর্ঘদিনের লোলুপ দৃষ্টি

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চাঞ্চল্যকর নার্স শাহনাজ পারভিন প্রিয়তা (২২) খুনের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক অটোরিকশাচালকসহ দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণীর প্রতি দীর্ঘদিনের লোলুপ দৃষ্টি ছিল বলে স্বীকার করেছে ঘাতক রুবেল।

শুক্রবার দুপুরে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) দীপক জ্যোতি খীসা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতাররা হলেন – উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জমিন মাঝি বাড়ির মকবুল আহাম্মদের ছেলে অটোরিকশা চালক মো: রুবেল (২৮) ও সন্দেহজনক হিসেবে চরফকিরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মজিবুল হক মাস্টার বাড়ির মজিবুল হকের ছেলে মমিনুল হক ফারুককে (৩০)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে স্থানীয় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক মো: রুবেল পলাতক ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাশের সুবর্ণচর উপজেলার চররশিদ গ্রামে অভিযান চালিয়ে আসামির শ্বশুর বাড়ি থেকে শুক্রবার ভোর রাতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

আসামিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বিস্তারিতভাবে ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন। তার গলার নিচে ভিকটিমের নখের আঁচড়ের দাগ দেখান। তিনি জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ ওই তরুণীর প্রতি তার লোলুপ দৃষ্টি ছিল।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ঘটনার রাতে ওই তরুণী রুবেলের অটোরিকশায় উঠলে তিনি সোজা পথে না গিয়ে কবরস্থানের পাশে জমির আইল সদৃশ্য রাস্তা দিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে যেতে থাকেন। এতে তরুণী প্রতিবাদ করলে তিনি জানান, এটা ভিকটিমের নানা বাড়ি যাওয়ার সবচেয়ে সহজ পথ। তখন ভিকটিম রিকশা থেকে নেমে ক্ষেতের মধ্য দিয়ে হাঁটা শুরু করলে রুবেল পিছন থেকে ভিকটিমকে আকস্মিক আক্রমণ করে তার মুখ চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ভিকটিম কাবু হয়ে পড়লে ওড়না দিয়ে তার মুখ শক্ত করে বেঁধে রুবেল তাকে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে দেখতে পান, ভিকটিম দম বন্ধ হয়ে মারা গেছে।

পুলিশ জানায়, তখন তিনি ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন এবং পথে জামাইয়েরটেক মোড়ের মসজিদের পাশে ক্ষেতের মধ্যে মোবাইল থেকে সিম খুলে ভেঙ্গে ছুড়ে ফেলে দেন।

পরে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ আসামি রুবেলের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে নিহত তরুণীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ভিকটিমের দুটি ভাঙ্গা সিম কার্ড ও হত্যাকারীর অটোরিকশাটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা কোম্পানীগঞ্জ থানায় ১ মার্চ লিখিত এজাহার দাখিল করলে পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেফতার করে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২৮ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে বসুরহাট পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ধানক্ষেত থেকে শাহানাজ পারভিন প্রিয়তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রিয়তা বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বসুরহাট মর্ডান হাসপাতালের নার্স হিসেবে কর্মরত ছিল। সে কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আশ্রাফপুর গ্রামের ফেঞ্জু মিয়া বাড়ির নুরুন্নবীর মেয়ে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on linkedin
LinkedIn
Share on print
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ