নিয়মিত দাঁতের যত্ন নিন

প্রতিবছর ৬ মার্চ ‘ওয়ার্ল্ড ডেন্টিস্টস্ ডে’ পালিত হয় ডেন্টিস্ট বা ডেন্টাল সার্জনদের প্রশংসা করার জন্য এবং ধন্যবাদ জানানোর জন্য। এ ছাড়া দিনটিতে জনগণের মাঝে দাঁতের যত্নে সচেতনতা সৃষ্টি করা যায় এবং দাঁত ও মুখের যত্নে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা যায়। দাঁতের যত্নে ডেন্টাল চেক-আপের বিষয়টি সাধারণ জনগণকে উৎসাহিত করে এ দিনটি উদযাপনের মাধ্যমে।১

দাঁতের যত্নে কীভাবে নিবেন : প্রতিদিন সকালে নাশতার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করতে হবে। প্রয়োজনে দুই দাঁতের মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানে অর্থাৎ ইন্টারডেন্টাল স্পেসে জমে থাকা খাদ্যকণা পরিষ্কার করার জন্য ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে হবে।

কী ধরনের টুথব্রাশ ব্যবহার করবেন : একটি নরম ফাইবারযুক্ত টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করবেন। টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার পর আপনার টুথব্রাশ পরিবারের সবার টুথব্রাশের সঙ্গে না রেখে আলাদা স্থানে রাখুন। একটি টুথব্রাশ প্রতি ২ থেকে ৩ মাস পর পর পরিবর্তন করা প্রয়োজন। টুথব্রাশের ব্রিসলগুলো যদি সোজা না থাকে অর্থাৎ বাঁকা হয়ে যায়, তখন সেই টুথব্রাশ আর কার্যকর থাকে না।

টুথপেস্ট : একটি ভালো টুথপেস্ট ব্যবহার করবেন। টুথপেস্ট পরিবর্তন করে ব্যবহার করা ভালো। আমাদের অনেকেরই ধারণা ফ্লোরাইড সব সময়ই উপকারী। আসলে কথাটি মোটেও ঠিক নয়। ফ্লোরাইড পাওয়া যায় পানি, খাবার এবং টুথপেস্টে। গবেষণায় দেখা যায়, অতিরিক্ত ফ্লোরাইড মাঝে মাঝে ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে। যদিও এর পক্ষে জোরালো প্রমাণ নেই, তারপরও কোনো এলাকার পানিতে অতিরিক্ত ফ্লোরাইড থাকলে বোতলজাত পানি পান করতে পারেন এবং ফ্লোরাইডবিহীন টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে। অতিরিক্ত ফ্লোরাইডের কারণে দাঁতে ফ্লোরোসিস হয়ে থাকে। এর ফলে, সামনের দাঁতে সাদা অথবা বাদামি দাগ পড়তে পারে। ফ্লোরোসিস হলে আপনার দাঁত ভঙ্গুর হতে পারে। তবে মাঝে মাঝে ফ্লোরাইড আপনার দাঁতের জন্য উপকারী। মাত্রাতিরিক্ত ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার এবং অতিরিক্ত ফ্লোরাইড সমৃৃদ্ধ পানি পান করবেন না।

দন্তক্ষয় হলে কী করবেন : প্রতিদিন দাঁতের স্বাভাবিক যত্ন না নিলে দাঁতে দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ হতে পারে। সূক্ষ্ম একটি দাঁতের ক্ষয় থেকে দাঁতের মজ্জা পর্যন্ত আক্রান্ত হয়ে মজ্জায় প্রদাহ সৃষ্টি করে। পর্যায়ক্রমে দাঁতের এ সংক্রমণ দাঁতের গোড়ার কোষে বিস্তৃতি লাভ করে। চিকিৎসা না নিলে খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণের মাত্রা বেশি হলে হাড় পর্যন্ত ছিদ্র হয়ে যেতে পারে। সংক্রমণ মুখের কোষ বা কলায় বিস্তৃতি লাভ করে, যাকে ডাক্তারি ভাষায় স্পেস ইনফেকশন বলা হয়। শুধু ডেন্টাল ক্যারিজ নয় বরং ডেন্টাল সংক্রমণ থেকেও এমনটি হতে পারে।

করণীয় : দাঁতের যত্নে এবং মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে অবশ্যই দিনে দুবার দাঁত ব্রাশ করতে হবে। ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে হবে। মিষ্টি এবং আঠালো কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যতটুকু সম্ভব বর্জন করতে হবে। কফি বা চা পানের পর একটু পানি মুখে দিয়ে কুলকুচি করে খেয়ে ফেললে মিষ্টি লালাযুক্ত তরল অংশ ওয়াশ আউট হয়ে যায়। বাচ্চাদের চকলেট মূল খাবারের যেমন লাঞ্চ বা ডিনারের আধঘণ্টা আগে দিলে খাবার গ্রহণের সঙ্গে মিষ্টি অংশ অপসারিত হয়।

লেখক : মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on linkedin
LinkedIn
Share on print
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ