নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের প্রতিবাদ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন এক ছাত্রকে নির্যাতনের প্রতিবাদে আবারও আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১৩ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করেন তারা।

এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল (১২ মার্চ) বিকালে নবীন শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। এর আগেও এমন নির্যাতন হয়েছে, দোষীদের প্রশাসন যে বিচার করেছে, তা খুবই হতাশজনক। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।

যতক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুষ্ঠু বিচার না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় আমরা অংশগ্রহণ করবো না বলে হুশিয়ারি দেন তারা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক তপন কুমার সরকার, অগ্নিবীণা হলের প্রভোস্ট কল্যানাংশু নাহা, সহকারী প্রক্টর ইরফান আজিজ, আসাদুজ্জামান নিউটন ও চন্দন কুমার পাল।

 শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে তপন কুমার সরকার বলেন, ‘এ ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। প্রথমে অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে, এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে এবং তারা কাজ করছে। দ্রুতই সিদ্ধান্ত হবে।’

উল্লেখ্য, শনিবার (১২ মার্চ) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের ২০৪ নং কক্ষে সংগীত বিভাগের নবীন ছাত্র সাগর চন্দ্র দে-কে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ভর্তি করা হয়। এদিকে অভিযুক্ত নির্যাতনকারী হলেন চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সৌমিক জাহান।

এবিষয়ে সাগর চন্দ্র দের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, শনিবার বিকালে ওই কক্ষে তাকে রোলিং চেয়ারে জোর করে বসান চারুকলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সৌমিক জাহান। তারপর তাকে ঘোরাতে থাকেন। এসময় তাকে বারবার থামাতে বললেও শোনেনি। একপর্যায়ে চেয়ারটি উল্টে গিয়ে পড়ে যান সাগর। এতে মাথায়, নাকে-মুখে মারাত্মক আঘাত পান তিনি। দুটি দাত ভেঙে গিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয় তার। পরে এ অবস্থাতেও তাকে হাসপাতালে নিয়ে জেতে বাধা দেন সৌমিক। এমনকি সাগরের ফোন ছিনিয়ে নিয়ে আটকে রাখেন তিনি।

ভুক্তভোগী সাগর বলেন, ‘আমাকে অত্যাচার করার পর আমার মোবাইলটি বারবার চাইলেও দিতে চায়নি। তবু অনেক চেষ্টার পর মোবাইলটি নিয়ে হাশর ভাইকে মেসেঞ্জারে একটি ছবি পাঠাই এবং লিখি, ‘ভাই আমি তো শেষ, রুম নম্বর ২০৪, অগ্নিবীণা হল। তাড়াতাড়ি আসেন।’ এরপর ৫ মিনিট পর এসে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।’

তবে, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সৌমিক জাহানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে নির্যাতনের ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অগ্নিবীণা হল প্রশাসন। ইরফান আজিজকে আহ্বায়ক করে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব হীরক মুশফিক ও সদস্য মো. আলিম৷ কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে হল প্রভোস্ট কল্যাণাংশু নাহা।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ