টিপু হত্যা: কে এই ‘শুটার’ মাসুম

রাজধানীতে ফিল্মি স্টাইলে মতিঝিল আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যারহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। ব্যস্ততম সড়কে অস্ত্র উঁচিয়ে আলোচিত এই খুনের অনেকটাই কিনারা করতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।

কিলিং মিশনে সরাসরি জড়িত দুহাতে অস্ত্র চালনায় পারদর্শী শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার সকালে বগুড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যা করা হয়। সড়কে যানজটে আটকা পড়ে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতিও (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

কে এই কিলার মাসুম: ডিবি পুলিশ ও অপরাধ জগতের সূত্রগুলো জানিয়েছে, মাসুমের বেড়ে ওঠা রাজধানীর গোড়ান এলাকায়। এরপর মতিঝিলে এসে ছাত্রলীগের কর্মী হিসাবে রাজনীতিতে জড়ায়। মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক এক শীর্ষ নেতার সঙ্গে তার রাজনৈতিক সখ্য ছিল।

এই এলাকায় ডিশ ব্যবসা ছিল মাসুমের। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। বাবা একজন স্কুলশিক্ষক। পড়াশোনা করেছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটে।

রোববার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান, কিলার মাসুমের স্ত্রী-সন্তান আছে।

অপরাধ জগতে পা রাখার পর হত্যাসহ ৪-৫টি মামলার আসামি হয়েছেন মাসুম। এসব মামলা থেকে মুক্তিসহ বেশকিছু সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এই হত্যাকাণ্ডের জন্য মাসুমকে রাজি করানো হয়। ডিবি বলছে, হত্যাকাণ্ডের পরদিন রাতে একটি গাড়িতে ঢাকা থেকে জয়পুরহাটে যান মাসুম।

সেখান থেকে সীমান্ত পার হয়ে তিনি ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে তিনি বগুড়া চলে যান। বগুড়া পুলিশের সহায়তায় সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মাসুমের সহযোগী মোটরসাইকেলের চালককেও শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিবি।

কলেজছাত্রী প্রীতিকে গুলি করার বিষয়ে মাসুম জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, অস্ত্রটি গুলি ভর্তি ছিল। টিপুকে লক্ষ করে সে গুলি চালায়। পরে টিপুর সঙ্গে একটি মেয়ে (প্রীতি) মারা যাওয়ার বিষয়টি সে জানতে পারে। তার ধারণাতেও ছিল না পুলিশ তাকে ধরে ফেলবে।

ফলে বগুড়ার হোটেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে শুরুতে হকচকিত হলেও পরবর্তীতে স্বাভাবিক আচরণ করেন। দ্বিধাহীনভাবে স্বীকার করেন টিপুকে গুলি করে হত্যার কথা।

এদিকে ঘটনার পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি হাতবদল হয়ে যাওয়ায় সেটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে মাসুমের সহযোগী গোয়েন্দা জালে রয়েছে। অস্ত্রটি উদ্ধার ও মাসুমের সহযোগীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on linkedin
LinkedIn
Share on print
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ