বিশ্ব উষ্ণায়নজনিত সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে ইতালির প্রায় এক পঞ্চমাংশ সৈকত জলমগ্ন হওয়ার গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্প্রতি ইতালীয় ভৌগোলিক সমিতি কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন ইতালীয় ভৌগোলিক সমিতি।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রোমে আয়োজিত এক সম্মেলনে ‘ডুবে যাওয়া ল্যান্ডস্কেপ’ শীর্ষক এই গবেষণাপত্রটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইতালির উপকূলরেখা কেমন হতে পারে তার একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরেছে।
ইতালির উপকূলরেখা আনুমানিক ৮ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ যার মধ্যে প্রাকৃতিক তীররেখা, নদীর মোহনা, বন্দর এবং কৃত্রিম বাঁধ অন্তর্ভুক্ত। এই বিশাল উপকূলরেখার কমপক্ষে ২০ শতাংশ আগামী শতাব্দীর মাঝামাঝিতে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি, উপকূলীয় ভাঙন এবং বন্যার কারণে তলিয়ে যেতে পারে।
গবেষকরা সতর্ক করেছেন যদি কোনো কার্যকর প্রশমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তবে ২১০০ সালের মধ্যে ইতালির উপকূলের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত জলের নীচে চলে যেতে পারে। এই গবেষণায় বেশ কয়েকটি এলাকাকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: অ্যাড্রিয়াটিক উপকূল বিশেষ করে আপুলিয়ার গারগানো উপদ্বীপের মতো জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যস্থল, তিরেনিয়ান উপকূল: টাস্কানি, লাজিও এবং কাম্পানিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ ও সার্ডিনিয়া: কাগলিয়ারি এবং ওরিসতানোর নিকটবর্তী উপকূলীয় এলাকাগুলোও ঝুঁকির মুখে রয়েছে।
এছাড়াও উত্তর ইতালির পো নদী বদ্বীপ অঞ্চল এবং ভেনিস উপহ্রদের মতো জলাভূমি অঞ্চলগুলো সবচেয়ে বড় বিপদের সম্মুখীন। একইসঙ্গে সমুদ্রের কাছাকাছি অবস্থিত একাধিক স্থল বন্দর, বিমানবন্দর এবং কৃষিজমি হুমকির মুখে।
ইতালির উপকূলীয় অঞ্চল যার প্রায় ১০ শতাংশ স্থায়ী অবকাঠামো দ্বারা আবৃত, ক্রমশ ভঙ্গুর হয়ে উঠছে। ইতালির উপকূল একটি গভীর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং এটি গুরুতর পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাবসহ একটি দুর্বল ল্যান্ডস্কেপে পরিণত হয়েছে।