২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও জবাবদিহি করতে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কমিশনের যা কিছু প্রয়োজন, তা প্রদান করা হবে। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কয়েকজন উপদেষ্টা ও কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০টির মতো অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৪০০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তাছাড়া ১৪০ জন অভিযোগকারীর সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে।
এ সময় কমিশনের সদস্যরা বলেন, গুমের সংখ্যা কমপক্ষে সাড়ে তিন হাজারের মতো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই কারাগারে রয়েছেন। আবার কেউ কেউ মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছেন। অনেককে গ্রেফতার দেখানোর পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। গুমের শিকার কিছু ব্যক্তি ভারতের কারাগারে বন্দি রয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে এখনো অনেকে কমিশনে আসছেন না। এসব গুমের নির্দেশদাতা ও এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে।
সদস্যরা আরও বলেন, গুমের শিকার ব্যক্তিদের আটকে রাখার স্থানটি সংরক্ষণ ও সেখান থেকে আলামত সংগ্রহের জন্য সরকারের সহায়তা প্রয়োজন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা ও সম্ভব হলে পাসপোর্ট বাতিলের অনুরোধ জানান কমিশনের সদস্যরা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, কমিশন থেকে অভিযুক্তদের তালিকা পেলেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, প্রয়োজনে কমিশনের মেয়াদ দুই বছর বাড়াবে সরকার। ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষায় আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করা হবে।
বৈঠকে উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, নুরজাহান বেগম, আদিলুর রহমান খান, এম সাখাওয়াত হোসেন, নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল হাফিজ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশিদ এবং প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য প্রেস সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।