এলাকায় কিশোর গ্যাং রয়েছে জিতুর

আশুলিয়ায় শিক্ষককে হামলা চালিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার প্রধান আসামি স্কুলছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। ‘জিতু দাদা‘ নামে একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করেছে সে। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হওয়ায় তাকে কিছু বলার সাহস পেতেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কেউ।

২৫ জুন দুপুরে আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ঘটা ওই ঘটনার পরদিন মারা যান শিক্ষক উৎপল কুমার। এ ঘটনার পর এলাকা ত্যাগ করা জিতুকে বুধবার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা গ্রামে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে র্যা ব।

এ ঘটনায় হওয়া মামলায় তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। উৎপলের মৃত্যুর পর তার ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। সেই মামলাতেই জিতুকে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যা বের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী পরিবারের এই ছেলে ‘জিতু দাদা’ নামে একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করেছিল।

সে বিভিন্ন সময় মাইক্রোবাস ভাড়া করে ঘুরত, মানুষকে হেনস্তা করত। তার বিরুদ্ধে বিচার দেওয়া হলে উলটো ভয়ভীতি দেখাত। বিচারপ্রার্থীর বাড়ির সামনে দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন দিত।

জিতুর এসব কর্মকাণ্ডের কারণে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা স্কুল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেছে। স্কুলের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসাবে উৎপল কুমার সরকার চেষ্টা করেছেন জিতুকে ‘কাউন্সেলিং’ করতে এবং এ ধরনের কাজ থেকে বিরত রাখতে।

কিছু দিন আগে জিতু কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে স্কুল কম্পাউন্ডের ভেতরে ঘোরাঘুরি করে। শিক্ষক উৎপল শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসাবে জিতু ও ওই ছাত্রীকে বোঝান। জিতু স্কুল প্রাঙ্গণে ধূমপান করত, অদ্ভুত স্টাইলে চুল রাখত।

বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেলে কলেজে প্রবেশ করত। এসব না করার জন্য জিতুকে অনেকবার বলেছেন উৎপল। এসব কারণে ক্ষোভ ছিল জিতুর। আর সর্বশেষ যোগ হয় ওই ছাত্রীকে নিয়ে ঘোরাফেরার ঘটনা।

ছাত্রীর সামনেই হিরোইজম দেখানোর জন্য ২৫ জুন পরিকল্পনা করে বাসা থেকে স্টাম্প নিয়ে স্কুলে যায় জিতু। শ্রেণিকক্ষের পেছনে সেটি লুকিয়ে রাখে। একপর্যায়ে উৎপলকে আঘাত করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে।

উৎপল সে সময় মাঠে ক্রিকেট খেলা পরিচালনা করছিলেন। মাঠের এক কোণে একা পেয়ে পেছন থেকে শিক্ষককে আঘাত করে জিতু।

এরপর এলোপাতাড়ি আরও আঘাত করে স্কুল ছেড়ে এলাকায় গিয়ে অবস্থান নেয় সে। সন্ধ্যায় জানাজানি হয়, শিক্ষক উৎপলের অবস্থা গুরুতর। এরপরই জিতু মানিকগঞ্জে এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেয়।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ