উত্তর ইতালির গোরিজিয়া প্রদেশের ত্রিয়েস্তের কাছে অবস্থিত ব্রাজ্জানো দি করমন্স শহরে ভয়াবহ ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ৩০০ মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নিতে বাধ্য করেছে কর্তৃপক্ষ। ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট এই বিপর্যয়ে তিনটি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে উত্তর ইতালিতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভূমিধসে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিখোঁজ থাকা এক পুরুষ ও এক মহিলার মৃতদেহ একদিনের নিবিড় তল্লাশির পর উদ্ধার করেন দমকলকর্মীরা। যদিও কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করেনি। স্থানীয় সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী নিহতরা হলেন একজন ৩২ বছর বয়সী জার্মান পুরুষ এবং তাঁর ৮৩ বছর বয়সী প্রতিবেশী মহিলা। জানা গেছে, ভূমিধসের সময় ঐ জার্মান লোকটি তাঁর প্রতিবেশীর খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন।
স্থানীয় দমকল পরিষেবা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিশ্চিত করেছে যে, করমন্সের একটি বাড়িতে আঘাত হানা ভূমিধসের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে প্রথমে একজন নিখোঁজের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে কর্মকর্তারা নিখোঁজ মহিলাটির মৃতদেহও খুঁজে পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্যাপক বৃষ্টিপাতের ফলে স্থানীয় তোর্রে নদীর বাঁধ উপচে যাওয়ায় এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। নদীর জল ও কাদা স্রোতের মতো শহরের রাস্তা দিয়ে বয়ে যায়, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে।
শহরের মেয়র রবার্তো ফেলকারো সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করেন, প্রবল বৃষ্টি আমাদের সম্প্রদায়কে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেছে। তিনি আরও জানান প্রায় আট ঘণ্টায় প্রায় ১০ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়েছে যা পুরো অঞ্চলে গুরুতর ক্ষতি ও সমস্যার সৃষ্টি করেছে। এই ভয়াবহতার কারণে আনুমানিক ৩০০ মানুষকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে সোমবার উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংস হওয়া বাড়ির নিচ থেকে একজনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হন এবং তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্থানীয় সংবাদ সূত্রে জানা গেছে তাঁর পা ভেঙে গেছে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, দমকলকর্মী এবং বেসামরিক সুরক্ষা সংস্থাগুলি এই দুর্যোগ মোকাবিলায় অক্লান্তভাবে কাজ করে চলেছেন। হেলিকপ্টার থেকে তোলা ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে এলাকার বেশিরভাগ অংশ জলের নিচে তলিয়ে গেছে যা এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ব্যাপকতা তুলে ধরছে।