আমি সেই মেয়ে
______সাবিরা খাতুন শান্তা
আমি সেই মেয়ে যার
বোকামি সুলভ নিশ্চুপ আবেদনের রেশ নেই।
যার আঁখি পল্লব রোজ স্বপ্ন বুনে
নিঃশর্ত, নিশ্চিত একমুঠো স্বাধীনতার জন্য।
কিন্তু সময়ের ডোরে স্বপ্নগুলো পুড়ে দুমুঠো ছাই জড়ানো ব্যথাতুর কফিন!
আঁচলে গিঁট বাঁধা চারদেয়ালের বদ্ধ ঘরের খিল, পায়ে বেড়ি বাঁধা হরেক রকমের অসুখ।
আনন্দের দিনগুলো ঝরে গেছে হাতের মুঠো থেকে সেই কবে?
জানি না- কখনো জানতেও চাই নি!
আমি সেই মেয়ে
যে ত্রুটিপূর্ণ পারফিউম লুকোতে, লুকোচুরি খেলি, রোজ বালিশে ইজারা দিচ্ছি, নিলাম ডাকছি সুখের বাজারে।
নিছক, এসবই নিছক দুর্ঘটনা, হাঁকডাক বেনামি চিহ্ন, কিংবা সত্যি!
সবচেয়ে দারুন ব্যাপার হলো কি জানেন?
স্বপ্ন দেখতেও ভাঙ্গতে বাঁধা নেই,তাই দেখছি
রোজ ভাংতি করছি দু টাকা নোটের মতো,
এভাবেই রোজ ভাঙ্গছি অঙ্কুরিত স্বপ্ন
বেশ কুড়িয়ে নিচ্ছি শোক,আহ্ কি স্বাধীনতা!
আমি সেই মেয়ে
যে শিখেছি জোড়ালো কন্ঠে”না” বলতে
আয়ত্ত করেছি ভিন্ন কৌশল, জেনেছি হারজিত সার্জারিতে সন্তুষ্ট থাকার মন্ত্র!
আমি সেই মেয়ে
যে রুমাল বাঁধা চোখে, তুড়ি মেরে ভাঙ্গতে প্রস্তুত অবহেলা রাক্ষুসে রক্তচক্ষু
উপেক্ষা করতে প্রস্তুত সহস্র শাসনের ঢেউ।
আমি সেই মেয়ে যে
নিজেকে বাঁচার মতো বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টায়, নিজের ভেতরের আমি টাকে ভালোবাসি তুঙ্গস্পর্শী হয়ে আমার আমি হয়ে উঠার জন্য!
বিমূর্ত একলা প্রহরে, তোয়াক্কা করি না কোন ভয়, গুমোট আঁধারে ছিটকে পড়া কু-প্রথা কোন কিছুই!
বাঁচতে শিখি রোজ নিজের ভেতর, নিজেকে তীলে তীলে সুদৃঢ় করে গড়ে তুলি, শুধুই নিজের জন্য!
আমি সেই মেয়ে
যার বদন ছুঁয়ে বয়সের ছাপ
ছয় পায়ে পিলপিল করে সমাজের অমনুষ্যত্বের ভাষায়।
দুই তীরের তীব্র যানজট নৃত্য করে ইচ্ছের ফোয়ারায়!
অমায়িক শান্তি, অশান্তি হিংস্রতার মূল শুধু যেথায় সেথায়, এক ঘরেই বাঁধা!
আমি সেই মেয়ে
কারো কটাক্ষে নতজানু নয়- শীর উঁচু করে হাঁটছি, নিজেকে সুধাচ্ছি সমালোচকের কর্ণপাতে আমোদ নেই, ফূর্তি নেই!
জোৎস্নার কিঞ্চিত হাসি ঠোঁটে ফুটিয়ে জানলার গ্রিলে কিংবা বেলকনিতে চোখ রেখে ভাবি-
ধুর ছাই! যার স্বভাব সে তো ভালো মন্দ উভয়েই সমালোচক।
ওতে আমার কিচ্ছুটি যায় আসে না
আমিতো আমার পথেই চলছি, আর এভাবেই চলে যাবো!
অবশেষে জানান দিতে চাই
আমি সেই মেয়ে
যে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি মৃত্যুর গ্রীবায়,
নামহীন চিঠির খামে লুকিয়ে রেখেছি সে কথা জানলায়!
তারিখ:- ১৭-০৫-২০২২ইং