আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতেও সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
তিনি বলেন, এবারের ইউপি নির্বাচনে তো বিএনপি-জামায়াত অংশ নেয়নি। জয়ী ও পরাজিত উভয়ই আওয়ামী লীগের লোকজন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পরাজিত প্রার্থীরা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
মঙ্গলবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রক্তের আখরে অর্জিত হয়েছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ। এসব আজ ইতিহাসের পাতায় বন্দি হয়ে আছে। সেখান থেকে বাংলাদেশ আজ অনেক দূরে। বলতে দ্বিধা নেই— আজকের এ বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ নয়। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলসমূহ, দুঃখজনক হলেও সত্য অপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক খাওয়াখাওয়িতে ব্যস্ত। জনগণের আশাজাগানিয়া রাজনীতি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ আর পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও ‘৭২-এর সংবিধান সাম্প্রদায়িকতামুক্ত হতে পারেনি। ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয় মৌলনীতি হিসেবে ইতোমধ্যে ফিরে এলেও রাষ্ট্রও কার্যকর করা হচ্ছে না। তবে এটি ঠিক, মুক্তিযুদ্ধের সরকারের আমলে নিবন্ধন আইনে বিরতি পূর্বেকার বৈষম্য দূরীভূত হয়েছে। হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন প্রণীত হয়েছে তাও নমিত, চাকরি-বাকরিতে নিয়োগ পদোন্নতি ও জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংস্থার সংগীতের বিরাজিত বৈষম্যের বেশ খানিকটা অবসান হয়েছে, ধর্মশিক্ষায় স্ব স্ব ধর্মের শিক্ষক সাম্প্রতিককালে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য যত কথাই বলা হোক না কেন, তা অনেকটা কথার কথায় পরিণত হয়েছে। দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ সরকারি দল বা সরকারের পক্ষ থেকে আরও আন্তরিকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
তিনি জানান, সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় এবং অস্তিত্বের সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ঐক্য মোর্চা গঠন করে মানবাধিকারের আন্দোলন পরিচালনা করা ছাড়া আজ সংখ্যালঘুদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই।
ঐক্য পরিষদ ও ঐক্য মোর্চার বছরব্যাপী আন্দোলনের কর্মসূচির শুরুতে আগামী ২৪ মার্চ বিকাল ৪টায় শাহবাগ চত্বরে সমবেত হয়ে প্রায় দুই লাখ নাগরিকের গণস্বাক্ষরসংবলিত এক স্মারকলিপি পদযাত্রা সহকারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে তার বরাবরে অর্পণ করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।