তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়। তাদের জ্বালাও, পোড়াও রাজনীতির জন্য তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান শাস্তিপ্রাপ্ত ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। সে কারণে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এজন্য বিএনপির নির্বাচনে কোনো আগ্রহ নেই। একই কারণে তারা তাদের দলকেও নির্বাচনমুখী করতে চায় না। আগামী নির্বাচনে তাদের যে পরাজয় হবে এটি মোটামুটিভাবে তারা নিশ্চিত হয়েছেন।
বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য মন্ত্রী বলেন, গত ১৩ বছরের সরকারের উন্নয়নের কারণে রাজনৈতিক পরাজয়ের আশংকায় বিএনপি ও তাদের দোসররা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আজকে দেশের সমস্ত মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ১৩ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে। আগের তুলনায় দেশের মানুষ আজ অনেক ভাল আছে। আর এ জাতীয় উন্নয়ন যাদের পছন্দ হয় না বিএনপি ও তাদের দোসররা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এসব ষড়যন্ত্রকারীরা মানুষের মধ্যে নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণমানুষের সংগঠন এবং বাঙালির সমস্ত অর্জন এসেছে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে। বাঙালির স্বাধীনতার সংগ্রামের নেতৃত্বে দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। বাংলাদেশ আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর ৯৯ তম। এ দেশ শস্য উৎপাদনের দিক দিয়ে ২য়, আলু উৎপাদনে সপ্তম, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে সেরা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে এখানে এসেছি তৃনমূলের নেতাদের সঙ্গে বসার জন্য, সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য। যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দিক নির্দেশনা প্রদান করার জন্য।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ও বিএনপির নেতারা বিভিন্ন রকম কথা বলছেন, তারা আমাকে উদ্দেশ্যে করে বিভিন্ন কথাও বলছেন। আমি গ্রামের এমপি। গত ২০-২২ বছরে আমি সব সময় আমার নির্বাচনী এলাকায় যাই। কিন্তু মির্জা ফখরুলরা সব সময় নয়াপল্টনে বসে থাকেন। সেখানেই খান, সেখানেই ঘুমান। সে কারণে তারা দেশের অবস্থা জানেন না।
তিনি বলেন, আমরা সারা দেশ বিচরণ করি। সারা দেশ ঘুরে বেড়াই। মির্জা ফখরুল ও রিজভী সাহেবরা তাদের দলীয় কার্যালয়ে বসে থাকতে থাকতে তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেছে। তাই রিজভী সাহেব উদ্ভ্রান্তের মতো কথা বলেন। আর ফখরুল সাহেব মিডিয়ায় মিথ্যে তথ্য উপস্থাপন করছেন; সেগুলো জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য। করোনা ও ইউক্রেন রুশ যুদ্ধের জন্য ২/১টি পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। এছাড়াও ২/১ জন বিএনপিপন্থী ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট তো রয়েছে। এটা শুধু আমাদের দেশে নয় সারা বিশ্বে পণ্যের দাম বেড়েছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ বিষয়ে ইতিমধ্যে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে ক্রয়সীমার মধ্যেই যে কোনো পণ্য সামগ্রী পেতে পারে টিসিবির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রত্যেকটি স্বল্প আয়ের মানুষকে এ টিসিবির পণ্য দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করে। সে সব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন এমপি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহ. সাদেক কুরাইশীর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, অ্যাডভোকেট সফুরা বেগম রুমি প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও আমরা একত্রে মিলিত হয়েছি। যারা ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছেন আপনাদের জানা উচিত কিভাবে চেয়ারম্যান হয়েছেন। যারা হতে পারেননি বিভিন্ন কারণে বা দলীয় কোন্দলের কারণে হেরেছেন। এ কারণে অনেক নেতাকর্মী বহিষ্কার হয়েছেন।
সভায় ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামসহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং দলীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।