একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় কক্সবাজারের ছয়টি মামলা হয়েছে।
এই ছয়টি মামলায় ৪৬৭ জনের নাম উল্লেখসহ ১১ হাজার নয় শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ পাঁচটি এবং চকরিয়ায় নিহত মোহাম্মদ ফোরকানের স্ত্রী একটি মামলা করেছেন।
এতে পুলিশের দায়ের পাঁচটি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সরকারি কাজে বাঁধা প্রদানের দায়ে এবং নিহতের স্ত্রীর মামলাটি হত্যা মামলা।
এর মধ্যে চকরিয়া থানায় তিনটি পেকুয়া থানায় দুটি এবং কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দুটি মামলা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে কক্সবাজারের জেলা পুলিশ সুপার মো: মাহাফুজুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মাহাফুজুল বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজার সরকারি কলেজের সামনের ইলিয়াস মিয়া স্কুল সংলগ্ন এলাকায় পুলিশের সাথে জামায়াতোর নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। জানাজা শেষে ঘরে ফিরে যেতে বললে এই ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের উপর হামলা ও যানবাহন ভাংচুর চালানো হয়।
এ ঘটনায় বুধবার বিকেলে কক্সবাজার সদর থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে দুই হাজার দুই শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পুলিশ মামলাটি করা হয়েছে। তবে এ মামলার বাদী ও আসামির নাম প্রকাশ করতে রাজী হননি পুলিশ সুপার।
তবে কক্সবাজার সদর থানার একটি সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজার সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ নেওয়াজ এই মামলা করেন।
এসপি মাহাফুজুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে একই ইস্যুতে চকরিয়ায় সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ দুটি মামলা এবং অপর একটি মামলায় নিহত ফোরকানের স্ত্রী নুরুচ্ছফা বাদী হয়েছেন।
পুলিশ বাদি হয়ে দায়ের করা মামলা দুটিতে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আড়াই হাজার করে মোট পাঁচ হাজার জনকে। এছাড়া নিহতের স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় কারো নাম উল্লেখ নেই। ওই মামলায় আড়াই হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এসব মামলার ক্ষেত্রেও এসপি বাদী পুলিশের নাম প্রকাশ করেননি। তবে চকরিয়ার থানার সূত্র বলেছেন, এই দুটি মামলার বাদি উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: আল ফোরকান।
এসপি জানান, বুধবার বিকেলে পেকুয়ায় পুলিশের উপর হামলার ঘটনায়ও পুলিশ দুটি মামলা করেছে। এতে ১৫১ জনের নাম উল্লেখ করে এক হাজার এক শ’ জন করে দুটি মামলায় মোট দুই হাজার দুই শ’ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার জানান, পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুফিজুল ইসলাম এই দুটি মামলা করেন।
ওমর হায়দার বলেন, পেকুয়ায় দায়ের হওয়া মামলা দুটি প্রধান আসামি করা হয়েছে পেকুয়া সদর জামায়াতের আমির ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মঞ্জু। উল্লেখদের মধ্যে বারবাকিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা বদিউল আলম জিহাদি, পেকুয়া উপজেলা জামায়াতের আমির আবুল কালামের নাম রয়েছে।
তবে এই ছয়টি মামলায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার দেখায়নি পুলিশ।