ফুল ভালোবাসেন না- এমন কেউ কি আছেন? কার অন্তর না মাতে ফুলের পরশে! বাঙালির জীবনাচরণে, সংস্কৃতির পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে ফুলের সৌরভ। পহেলা ফাল্গুনে খোঁপায় তাজা ফুল গুঁজবে না এমন তরুণী খুঁজে পাওয়া যাবে না।একদিকে ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন, অন্যদিকে ভালোবাসা দিবস। তাই ফুল অপরিহার্য্য।
পহেলা ফাল্গুনে প্রকৃতি ও তারুণ্য সবই রঙীন। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই বাসন্তি রঙের আস্তর। হলুদ শাড়ি অঙ্গে জড়িয়ে বঙ্গ ললনাদের ঘুরে বেড়ানোরই দিন আজ।
ফুল সৌন্দর্য, আবার ভালোবাসারও প্রতীক। ভালোবাসার উচ্ছাসমাখা ফুল আজ অঙ্গে থাকবে -এটাই সহজাত। ফুল যেমন নিজের সাজসজ্জায় প্রয়োজন, তেমনি উপহারেও অনন্য। যেমন- কবি পুর্ণেন্দু পত্রী তার প্রিয়ার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘তুমি ফুল ভালোবাস বলে-/তোমাকে ফুলের বৃন্তে মাঙ্গলিক উৎসবের মতো লাগে বলে-/আমাকে ফুলের খোঁজে যেতে হয় পথ খুঁজে খুঁজে-/সিন্ধুনদ, হিন্দুকুশ, হরপ্পার মতো দূর-দূরান্তরে।’
তাই রাজধানীতে ফুল কেনার ধুম পড়েছে। ফুল দোকানগুলোতে জমজমাট হয়ে উঠেছে কেনা-বেচা। কোথাও কোথাও শেষ হয়ে গেছে দোকানো সাজিয়ে রাখা মন কেড়ে নেওয়া গোলাপ। বাজারে গোলাপের পাশাপাশি গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, গ্ল্যাডিওলাস এর বেচাকেনাও বেশ। এসবের সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে টিউলিপও।
আবার নাগরিক উদ্যানে বনে পার্কে তারও আগে থেকে ফুটে আছে ফাগুনে অনিবার্য পলাশ শিমুল। চারপাশের এসব দৃশ্য দেখেই রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ওরে ভাই, ফাগুন এসেছে বনে বনে/ডালে ডালে ফুলে ফলে পাতায় পাতায় রে,/আড়ালে আড়ালে কোণে কোণে।
বলা যায়, সবকিছুই এখন ফুলময় রঙীন। সুন্দর পিয়াসীদের পদভারে মুখরিত শাহবাগ চারুকলা কিংবা অন্য কোন আকর্ষণীয় প্রাঙ্গণ। সর্বত্রই যেন উৎসব আর করোনা বাধা ঠেলে অঘোষিত বসন্ত শোভাযাত্রা।