লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় শহীদ মিনারে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের সড়কের ডাকবাংলোর সামনে, প্রধান সড়ক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদেরকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলায় একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দিবসের কর্মসূচি শুরু করেন। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করতে আসেন।
উপজেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলামে নেতৃত্বে একটি র্যালি নিয়ে রায়পুর নতুন বাজার এলাকার শহীদ মিনারে সকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা ভাষা শহীদদের স্মরণে ফুল দিতে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে নিজেদের রক্ষায় তারাও পাল্টা হামলা চালায়।
এতে ছাত্রদল, যুবদলের সাথে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের মাঝে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করা হলে পথচারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জুম্মন হোসেন (৩২) এবং ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুজন পাটওয়ারী (৪০), পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন (২৪), ছাত্রদল নেতা সুমন (২২), উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য রিয়াজ (২৬), শান্ত (২২), সোহেল (২৩), কাউছার (২২) ও রাজীব (২০) আহত হন।
আহতদের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠন তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ মিছিল বের করে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম বলেন, শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে আসার পথে বিনা উস্কানীতে আওয়ামী লীগ ও তাদের অন্যান্য অঙ্গসংঘঠনের সদস্যরা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে আমাদের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা ও দোষীদের শাস্তি দাবী করছি।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে আসার পথে আওয়ামী লীগ-বিএনপির নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কেউই আটক নেই। প্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করতে আসেনি। অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।