রামদা হাতে ভাইরাল সেই সাবেক যুবদল নেতাকে গুলি ও পায়ের রগ কেটে হত্যা

খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মাহবুবুর রহমানকে (৪০) নিজ বাড়ির সামনে গুলি করে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের আগে বেলা দেড়টার দিকে নগরীর মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মাহবুবুর রহমানকে খুব কাছ থেকে প্রথমে গুলি করা হয়। পরে পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায় দুর্বৃত্তরা। তাঁর লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাহবুবুর রহমান মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকার মো. আব্দুল করিম মোল্লার ছেলে।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দুপুরে বাসার সামনে নিজের প্রাইভেট কার পরিষ্কার করছিলেন মাহবুবুর রহমান। এ সময় হেলমেট পরা অবস্থায় তিনজন একটি মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পরে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য দুর্বৃত্তরা তাঁর দুই পায়ের রগ কেটে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে আমরা চারটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছি। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি লেগেছে।’

মীর আতাহার আলী বলেন, ‘মাহবুবের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে থানায় আটটি মামলা রয়েছে। মাদক বিক্রি নিয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব চলছিল বলে জেনেছি। এর জেরে ধরেই হত্যাকাণ্ড কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারে এরই মধ্যে অভিযান শুরু হয়েছে।’

জানা গেছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় শতাধিক মানুষ আহত হয়। ওই সংঘর্ষের সময় রামদা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা যুবদল নেতা মাহবুবুর রহমানের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন মাহবুবকে বহিষ্কার করে যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। এরপরও তিনি নিয়মিত দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।

এলাকাবাসী জানান, গত ৫ আগস্টের পর এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন মাহাবুব। মাদক বিক্রি নিয়ে এলাকার একটি পক্ষের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলছিল। এর জেরে আগেও কয়েকবার মাহবুবের ওপর হামলা হয়।

এদিকে মাহবুবের মৃত্যুর খবর শুনে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘খুলনায় একটি হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হয়নি। আমরা বারবার বলছি, খুলনার আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন হত্যাকাণ্ডসহ অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। নগরীর অলিগলি মাদকে ছেয়ে গেছে। কিন্তু প্রশাসন কোনো কর্ণপাত করছে না। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা মাহবুব হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ