স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজ দেখতে চাওয়া নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর এবং হামলা করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের একপক্ষ। এসময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করায় এক সাংবাদিকের মোবাইলফোন কেড়ে নিয়ে তাকে মারধর করেছে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
সোমবার বিকাল সোয়া ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম সংলগ্ন নিরাপত্তা শাখার সামনে ওই ঘটনা ঘটে। আহত ওই সাংবাদিকের নাম ওমর আসিফ। তিনি ময়মনসিংহের একটি স্থানীয় অনলাইন পোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
প্রত্যক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চের ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজ চেয়ে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের একপক্ষ। তারা বাকৃবির হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল, ফজলুল হক হল, শামসুল হক হল ও ঈশা খাঁ হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। বিক্ষোভের একপর্যায়ে নিরাপত্তা শাখার উভয় পাশের রাস্তা বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। এসময় একটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর করা হয় এবং চালকসহ গাড়ির যাত্রীদের মারধর করা হয়।
এদিকে গাড়ি ভাঙুচের ভিডিও ধারণ করতে গেলে ময়মনসিংহ লাইভ অনলাইন পোর্টালে কর্মরত বাকৃবি প্রতিনিধি ওমর আসিফের উপর চড়াও হয় শামসুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহীন সুমনসহ আরও কয়েকজন। এসময় তারা আসিফকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। মারধরের সময় তার ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং অকথ্য ভাষায় তাকে গালিগালাজ করা হয়। এরপর আহত ওমর আসিফকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয় বলে জানান প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা আরও জানান, এসময় বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. আবু হাদী নূর আলী খান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন, সহকারী প্রক্টর ড. মো. শফিকুল ইসলাম ও ড. মো. রিজওয়ানুল হক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনায় সন্ধ্যার দিকে ওমর আসিফের উপর হামলার ঘটনায় ওই হলগুলোর বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা ইমতিয়াজ আবির, আবু রায়হান মিথুন, সজীব চন্দ্র সরকার, নিলয় মজুমদার ও মিফতাহ তার কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান। ওই আন্দোলন ও ভাঙচুরের সাথে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলেও জানান তারা।
আহত সাংবাদিক ওমর আসিফ বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা গাড়ি ভাঙচুরের সময় আমি আমার পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। এসময় শামসুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহীন সুমনসহ আরও কয়েকজন আমার উপর হামলা করে। আমি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও সুষ্ঠু বিচার চাই।’
তবে সাংবাদিকের উপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত শাহীন সুমন বলেন, ‘আমি আন্দোলনে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু আমি কারো গায়ে হাত তুলিনি।’
এদিকে সাংবাদিক মারধরের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযুক্তের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।