রুশ হামলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে সাজানো-গোছানো ইউক্রেন। অমানবিক আগ্রসনের দায়ে বৈশ্বিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর অধিকাংশই ভ্লাদিমির পুতিনের দেশকে ব্রাত্য ঘোষণা করেছে। ফিফা-উয়েফা কর্তৃক নির্বাসিত হয়েছে দেশটি। ফুটবলের দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্তকে স্পোর্টিং স্পিরিটের পরিপন্থী বলে দাবি করে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে (সিএএস) আপিল করে রাশিয়ান ফুটবল ইউনিয়ন (আরএফইউ)। তাদের প্রচেষ্টা দেখেনি সফলতার মুখ। গত মাসে রুশ ফুটবলের ওপর উয়েফার দেয়া নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছিল সিএএস। এবার ফিফার দায়েরকৃত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিলই তুলে নিলো আরএফইউ।
গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সকল ক্লাব ও জাতীয় দলকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করে ফিফা ও উয়েফা। এরপর কোর্ট অব আরব্রিটেশন ফর স্পোর্টসে (সিএএস) আপিল করে রাশিয়া।
শুধু ফুটবল না, আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস, রাগবি, রোয়িং ও স্কেটিং থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আপিল করেছিল দেশটি। গত মাসে তার শুনানিতে ফিফার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রাশিয়ার আবেদন নাকচ করে দেয় সিএএস। এখন সেই আপিলই তুলে নিল রাশিয়া।
সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, উয়েফার বিরুদ্ধে আপিল অব্যাহত রাখবে রাশিয়া। সিএএস জানিয়েছে, রাশিয়ান ক্লাবগুলোর ওপর উয়েফার নিষেধাজ্ঞা তারা তুলে নেবে না এবং চূড়ান্ত শুনানির দিন খুব শিগগির ধার্য করা হবে।
নির্বাসিত হওয়ার কারণে কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্লে-অফে থেকে বাদ পড়ে রাশিয়া। ২০২২ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে পারবে না তাদের নারী দল।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্লে-অফের সূচি অনুযায়ী গত ২৪শে মার্চ পোল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে খেলার কথা ছিল রাশিয়ার। ম্যাচটি রাশিয়া জিতলে সেখানেই ২৯শে মার্চ সুইডেন অথবা চেক প্রজাতন্ত্রের মুখোমুখি হতো তারা। রুশদের নিষিদ্ধ করায় পোল্যান্ডকে প্লে অফ ফাইনালে ওঠার ছাড়পত্র দেয় ফিফা। পরে ফাইনালে সুইডেনকে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপে খেলার টিকিট পায় রবার্ট লেভানদোভস্কির পোল্যান্ড।
রুশদের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞার ফলে ইউরোপা লীগ থেকে ছিটকে যায় ক্লাব স্পার্তাক মস্কো। শেষ ষোলোর ড্রয়ে আরবি লাইপজিগকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল তারা।
রাশিয়ার গ্যাস কোম্পানি গাজপ্রমের সঙ্গে স্পন্সরশিপ চুক্তিও বাতিল করেছে উয়েফা। চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ও ইউরো ২০২৪ আসরের স্পন্সর ছিল গাজপ্রম।
দুই প্রতিবেশী দেশের কয়েক সপ্তাহের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোষণার পর ইউক্রেনের বিরুদ্ধে স্থল, আকাশ ও জল পথে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে রুশ বাহিনী। এরপর থেকে একে একে রাশিয়ার ক্রীড়া মহলে নিষেধাজ্ঞা নেমে আসে। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবুর্গ থেকে চলতি মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনাল প্যারিসে সরিয়ে নিয়েছে উয়েফা।