দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে ইউক্রেনের ধনীরা

সীমান্তে উত্তেজনা ও যুদ্ধের আশঙ্কার মধ্যে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন ইউক্রেনের ধনীরা। যতই সময় যাচ্ছে, এই সংখ্যা ততই বাড়ছে। এদের মধ্যে ধনী ব্যবসায়ী যেমন আছেন তেমনি আছেন রাজনীতিকও। মূলত ভাড়া করা বিমানে করে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পাড়ি জমাচ্ছেন তারা। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ইউক্রেনস্কায়া প্রাভদার বরাত দিয়ে সোমবার এ খবর জানায় দ্য মস্কো টাইমস।

ইউক্রেনে রুশ হামলার আশঙ্কায় নিজেদের নাগরিকদের নিরাপদে সরে যাওয়ার কথা বলছে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ ১২টির বেশি দেশ ইউক্রেন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। নিজ নিজ দেশের সরকারের পক্ষ থেকে এমন আহ্বানের পর অনেক কূটনীতিকই কিয়েভ ছেড়েছেন। কেউ কেউ তল্পিতল্পা গুছিয়ে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু বিদেশিদের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ইউক্রেনীয় নাগরিকও দেশ ছেড়েছেন।

ইউক্রেনস্কায়া প্রাভদা সোমবার জানায়, আগের দিন রোববারই অন্তত ২০টি ভাড়াটে বিমান কিয়েভ ছাড়ে। যার সবগুলোই ধনী ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারগুলোর জন্য ‘রিজার্ভ’ ছিল। সংবাদ মাধ্যমটির মতে, গত ছয় বছরে একদিনে এত ধনী দেশ ছাড়েনি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওইদিন দেশ ছাড়া ধনীদের মধ্যে ইউক্রেনের সবচেয়ে ধনী দুই ব্যক্তি রিনাট আখমেতোভ ও ভিক্টর পিনচুকও ছিলেন। এছাড়া ওই দিন দেশ ছাড়েন জাহাজ ব্যবসায়ী আন্দ্রেই স্তাভনিতসার ও কৃষিপণ্য ব্যবসায়ী ভাদিম নেস্তারেঙ্কোও।

ইউক্রেনস্কায়া প্রাভদা জানায়, ইউক্রেনের রুশপন্থি বিরোধী দল লাইফ পার্টির অন্যতম নেতা ও রাজনীতিক ইগর আব্রামোভিচও দেশ ছেড়েছেন। পরিবার ও দলের ৫০ সদস্য নিয়ে বিমানে চেপে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় পাড়ি জমিয়েছেন তিনি। ব্যবসায়ী ও ইউক্রেনের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী বরিস কোলেসনিকোভও একইদিনে কিয়েভ ছাড়েন। তবে দেশ ছাড়ার খবরের পর ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এখনো ইউক্রেনেই রয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

দাম বাড়তে পারে গম-ভুট্টার : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধলে গম-ভুট্টার দাম বেড়ে যাবে বিশ্বে। মঙ্গলবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বিশ্বের শীর্ষ গম রাপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া। ইউক্রেনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গম ও ভুট্টা রপ্তানি করে। তাই দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান পরিস্থিতি সংঘাতে রূপ নিলে বেড়ে যেতে পারে এসব খাদ্যশস্যের মূল্য। এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল প্ল্যাটসের শস্য বিশ্লেষণের প্রধান পিটার মেয়ার বলেন, যা ঘটছে তার ওপর ভিত্তি করে অবশ্যই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। গম ও ভুট্টার চালানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের হস্তক্ষেপে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে বিশ্বের এমন কিছু দেশ রয়েছে যারা সরবরাহের জন্য এই দেশ দুটির ওপর নির্ভর করে।

যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা জানায়, ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে খাদ্যমূল্য বেড়েছে ২৮ শতাংশ।

আশঙ্কা করা হচ্ছে সরবরাহ ইস্যুর কারণে চলতি বছরেও খাদ্যের দাম বাড়তে পারে। ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া।

সে কারণেই যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজ দেশের নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিভিন্ন দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, এস্তোনিয়াসহ ডজনখানেক দেশ তাদের নাগরিকদের দ্রুত ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে কোনো ধরনের আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছে মস্কো।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on linkedin
LinkedIn
Share on print
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ