‘তিনদিন আগে মাসুম নাম পায় কাকে খুন করতে হবে’

রাজধানীর মতিঝিলের আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে ফিল্মিস্টাইলে গুলি করার তিনদিন আগে  হত্যার নির্দেশ পান এ ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ।

রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার। তবে হত্যার আগের দিনই টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ স্বীকার করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যার জন্য ঘটনার ৫ দিন আগে ‘কন্ট্রাক্ট’ (চুক্তি) করে মাসুম মোহাম্মদ আকাশ নামে এক পেশাদার খুনি। তিন দিন আগে সে নাম পায় কাকে খুন করতে হবে। ঘটনার আগের দিন টিপুকে কমলাপুরে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় সে। হত্যাকাণ্ডের জন্য টাকা নয়, আগের কয়েকটি মামলা তুলে নেওয়াসহ বিশেষ সুবিধার নিশ্চয়তা দেওয়া হয় তাকে।

হাফিজ আক্তার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শুটার আকাশ জানিয়েছে, ঘটনার আগের দিন ২৩ মার্চ জাহিদুল ইসলাম টিপুকে তার এজিবি কলোনির রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় যাওয়ার রাস্তায় অনুসরণ করে গুলি করার প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু বেশি লোকজন থাকায় সে ব্যর্থ হয়।

আসামির বরাত দিয়ে তিনি জানান, পর দিন আবার সে টিপুকে অনুসরণ করে। টিপুর গাড়ি শাহজানপুরে রাস্তায় যানজটে দাঁড়ালে টিপুকে লক্ষ্য করে এলাপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যান আকাশ।

ডিবির এই মুখপাত্র আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানান, হত্যাকাণ্ডের তিনদিন আগে শুটার মাসুম ও তার এক সহযোগী হত্যা করার জন্য টিপুর নাম পান। আর তখন থেকে তিনি তার সহযোগীকে নিয়ে রেকি শুরু করেন। হত্যাকাণ্ডের আগের দিনও তারা মোটরসাইকেল নিয়ে এজিবি কলোনির ভেতরে অবস্থান করছিলেন টিপুকে হত্যার জন্য। সেদিন সুযোগ না পাওয়ায় পরদিন হত্যা মিশন শেষ করেন তারা। কিলিং মিশনে ছিলেন মাসুম এবং তার সহযোগী ছিলে মোটরসাইকেল চালানোর দায়িত্বে। ঘটনার পরদিন একটি গাড়ি নিয়ে মাসুম জয়পুরহাট চলে যান।

এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, তদন্তে নানা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ওই গাড়ির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আটক করার পর তাদের তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার (২৬ মার্চ) রাতে জয়পুহাট থেকে শুটার মাসুমকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগ।

ঘটনার পর দুই বন্ধুর সহযোগিতায় নিরাপদ স্থানে আত্মগোপনে যায় শুটার মাসুম। পরে সে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিরপরাধ রিকশা আরোহী প্রীতি এবং টিপুর মৃত্যুর সংবাদ দেখতে পায়। এরপর সে জয়পুরহাট চলে যায়। সেখান থেকে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পার হতে না পেরে বগুড়ায় যায় সে। সেখানে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর বগুড়া জেলা পুলিশের সহযোগিতায় মাসুমকে গ্রেফতার করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on linkedin
LinkedIn
Share on print
Print

এ বিভাগের আরো খবর

ফেসবুক পেজে লাইক দিন

বিভাগীয় সংবাদ