সরকারের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে গ্যাসের মজুত থাকা সত্ত্বেও তা উত্তোলন ও বিতরণে অপচয় রোধে সরকার কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবে গণশুনানি করছে। উদ্দেশ্য এ গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করা।
‘যারা আমদানি করছে তারা সরকারের উপদেষ্টা। এই সরকারের প্রশ্রয় নিয়ে যারা একছত্র ব্যবসা করছে তারা আজকে গ্যাস আমদানি করছে। সুতরাং তাদের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য তা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সিন্ডিকেট তৈরি করে জনগণকে পুরোপুরিভাবে একটা দুঃসহ অবস্থার মধ্যে ফেলেছে।’
বুধবার বিকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পেশাজীবী সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে পেশাজীবীদের ভূমিকা : বর্তমান প্রেক্ষিত’ শীর্ষক এই সভা হয়।
জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে সরকার পদত্যাগ না করলে পালানোর পথ খুঁজে পাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, আমাদের নাকি তওবা করে নির্বাচনে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমি উনাকে বলতে চাই, জনগণের কাছে তওবা করে ক্ষমা ভিক্ষা চান আপনাদের কৃতকর্মের জন্য। যে মানুষ হত্যা করেছেন, যাদের অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন তার জন্য। গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক করে রেখেছেন এবং ৩৫ লাখ রাজনৈতিক কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন, ৬শ বেশি মানুষকে গুম করেছেন তার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চান।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দশে করে মির্জা ফখরুল বলেন, যে অন্যায় পাপ করেছেন, সে পাপের জন্য জনগণের কাছে কড়জোরে ক্ষমা ভিক্ষা চান। ক্ষমা ভিক্ষা চেয়ে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। না হলে পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।
বিএনপি মহাসচিব জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেন, এজন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ঐক্যের। আমরা আহ্বান জানিয়েছি সব রাজনৈতিক দলকে, সব রাজনৈতিক শক্তিকে-ব্যক্তিকে যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে- আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যিনি মিথ্যা মামলায় বিদেশে নির্বাসিত হয়ে আছেন তাকে মুক্ত করি। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা রয়েছে, তা প্রত্যাহার করি। দেশে সত্যিকার অর্থেই একটা জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করি, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করি।
দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি সরকারের ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যখন মানুষ ট্রাকের সামনে লাইন দিচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য। চাল-ডাল-তেল-লবণের জন্য যখন মানুষ আহাজারি করছে সেই সময় আবার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে, আবার প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়িয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র তারা করেছে। জনগণের পকেট কেটে জনগণকে আরও দুর্ভোগের মধ্যে ফেলছে।
বিএনপির স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে পেশাজীবী সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন- কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, পেশাজীবী নেতা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, শওকত মাহমুদ, আব্দুল কুদ্দুস, এম আবদুল্লাহ, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, ডা. রফিকুল ইসলাম, আবদুল হালিম, নুরুল আমিন রোকন, রফিকুল ইসলাম, একেএম জহিরুল ইসলাম, কাজী সাখাওয়াত হোসেন, জাকির হোসেন, জাহানারা সিদ্দিকী, ফখরুল আলম, বিপ্লব উজ্ জামান বিপ্লব, তানভীরুল আলম প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব রিয়াজুল ইসলাম রিজু।